বুথফেরত ফলাফল বলছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বড় জয় নিয়ে ফের ক্ষমতায় বসছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি। এই ঘোষণার কাউন্টার দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, বুথফেরত ফলাফল পুরোপুরি ভুয়া।

ভারতের এই নির্বাচনের আসল ভোটের ফল জানা যাবে আগামী মঙ্গলবার। অর্থাৎ, শেষ দফার ভোটদান এবং গণনার মাঝে রয়েছে তিন দিনের ব্যবধান। এই ক’দিন ভারতের রাজনীতিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে বুথফেরত সমীক্ষা।যেকোনও নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওৎপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকে বুথফেরত সমীক্ষা। নির্বাচন কমিশনের ফল ঘোষণার আগে সবাই এই সমীক্ষাগুলির দিকে চেয়ে থাকে। ভোটের পরে তা নিয়ে চলে বিস্তর চর্চা।

বুথফেরত সমীক্ষা আসলে কী? কেন এই সমীক্ষা করা হয়? 

বিভিন্ন কেন্দ্রে মানুষের ভোট দেওয়া হয়ে গেলে ভোটারদের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগেই কোথায় কোন দল কতগুলি আসন পাবে, তার ভবিষ্যদ্বাণী করে বুথফেরত সমীক্ষা।

সাধারণত, কয়েকটি নির্বাচনি সংস্থা এই ধরনের সমীক্ষার আয়োজন করে থাকে। ভোটারদের ‘মনের কথা’ জানতে তারা ব্যবহার করে বেশ কিছু কৌশল। তার মাধ্যমেই তৈরি করা হয় নির্বাচনের সম্ভাব্য ফল।

বুথফেরত সমীক্ষা তৈরি করার জন্য ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘোরেন সমীক্ষকেরা। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন। বোঝার চেষ্টা করেন এলাকার রাজনৈতিক ‘হাওয়া’। কোন রাজ্যে কোন দল কতগুলি আসন পেতে পারে, তার নকশা তৈরি করা হয়।

সমীক্ষার জন্য প্রথমে বিভিন্ন কেন্দ্রের কয়েকটি বুথ বাছা হয়। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন সমীক্ষকেরা। ভোট দিয়ে ভোটাররা বেরোলে তাঁদের নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন করা হয়। সেই উত্তরের ভিত্তিতে তৈরি করা হয় সমীক্ষার ফল।

অনেক ক্ষেত্রে ভোট দিয়ে বেরোনোর পর ভোটারদের সামনে ধরা হয় নমুনা ইভিএম। সেখানে গোপনে তারা আবার ‘ভোট’ দেন। সমীক্ষার ফল নির্ভর করে ওই নকল ভোটের উপরেও।

তবে এই বুথফেরত সমীক্ষার উপর কোনও ভাবেই কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করে না। সমীক্ষার ফলের সঙ্গে আসল ফল না-ও মিলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই সেই নজির রয়েছে। দেখা গেছে, বুথফেরত সমীক্ষার ফল একেবারে উল্টে গেছে ভোট গণনার দিন।

ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস বলছে, বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত সব সময় মেলে না। বুথফেরত সমীক্ষা একেবারে ভুল প্রমাণিত হওয়ার উদাহরণও অসংখ্য। বুথফেরত সমীক্ষার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস মিলে যাওয়ার উদাহরণও রয়েছে।