র্যাবের কোনো সদস্য পালাননি, কর্মবিরতিতেও যাননি
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৮: ০৪
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌসছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুলিশের অনেক সদস্য পালিয়ে যাওয়ার খবর এলেও র্যাবের কোনো সদস্য পালিয়ে যাননি বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্টের আগে ও পরে র্যাবের কোনো সদস্যই পালিয়ে যায়নি, কর্মবিরতিতেও যাননি।
আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, র্যাব একটি কম্পোজিট ফোর্স। এখানে প্রায় আটটি বাহিনী থেকে সদস্যরা আসেন। এর মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ আসেন পুলিশ থেকে। এখানে সবচেয়ে বড় অংশটাই পুলিশের—৫০ শতাংশের কাছাকাছি। র্যাব কিন্তু ছোট একটা বাহিনী। ১০ হাজার প্লাস-মাইনাস একটা ফোর্স। এই ১০ হাজার ফোর্সের মধ্যে ৪৪ শতাংশ পুলিশ। কোনো সদস্য কিন্তু পালিয়ে যাননি।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে যেভাবে একসঙ্গে ছিলাম, আমরা শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলাম। এখানে অনেকের অনেক ধরনের সমস্যা ছিল, কিন্তু আমাদের র্যাব ফোর্সেসে কখনোই কোনো সমস্যা হয় নাই।’
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘এর আগেও বলেছি, ছাত্র-জনতার ওপরে র্যাবের কোনো সদস্য লিথ্যাল ওয়েপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করেননি। সাধারণ ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন ছিল, সেটার সঙ্গে র্যাব ছিল। এই যে অভ্যুত্থান, এটাকে সফল করার জন্য এখন যা যা করণীয়, আমরা সবই করে যাচ্ছি।’
সরকার পতনের পর জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের ৩৯ নেতাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান র্যাবের মুখপাত্র। তিনি বলেন, যাঁরা মামলার এক-দুই নম্বর আসামি, প্রতিদিনই সেই ‘রাঘববোয়ালদের’ ধরা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ১৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২১৯টি অস্ত্র উদ্ধার ও ১০ হাজার ৬৪২টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
অপহৃত শিশু উদ্ধার
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার সদরঘাট থেকে অপহৃত প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নূর তুষারকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে উদ্ধারের কথা জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সদরঘাটের সোয়ারীঘাট এলাকায় আবদুল্লাহ আল নূর তুষার নামের আট বছর বয়সী একটি শিশুকে অপহরণ করা হয়। মুঠোফোনে তুষারের মায়ের সঙ্গে বাদল ওরফে হৃদয় নামের এক তরুণের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে ঘটনার দিন তুষারকে নিয়ে তাঁর মা সদরঘাটের সোয়ারীঘাট এলাকায় বাদলের সঙ্গে দেখা করতে যান।
তুষারকে চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যান বাদল। শিশুটির মা ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। ২ অক্টোবর এক ব্যক্তি শিশুর মাকে ফোন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এরপর তুষারের বাবা একটি মামলা করেন।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-২ ও ৮–এর যৌথ অভিযানে শনিবার রাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার আমরাগাছি হোগলপাতি এলাকা থেকে তুষারকে উদ্ধার করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যান। মূল অভিযুক্ত বাদলসহ জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।